১৫ই আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ৩১শে শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

প্রচ্ছদ আইন আদালত, সারা বাংলা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার পিতার মতোই বিচার বিভাগের স্বাধীনতায় ও উন্নয়নে বিশ্বাসী – আইনমন্ত্রী
১৪, সেপ্টেম্বর, ২০২০, ৫:০৪ অপরাহ্ণ - প্রতিনিধি:

আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, করোনাভাইরাসের কারণে প্রায় আড়াই মাস আইনজীবী বিশেষ করে জুনিয়র আইনজীবীরা তাদের প্র্যাকটিস থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। এতে অনেকেই আর্থিক সংকটে পতিত হয়েছেন। অনেকেই কষ্টে আছেন। তাদের এই কষ্ট লাঘবের জন্য স্বল্পসুদে দীর্ঘ মেয়াদি ঋণ দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের মাধ্যমে এই ঋণ দেওয়া হবে।

রবিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) ফরিদপুরে ৫৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত আট তলা বিশিষ্ট চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সিং এর মাধ্যমে প্রধান অতিথি হিসেবে যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন আইনমন্ত্রী।

শেখ হাসিনার আমলে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা ও জেল হত্যা মামলার বিচার হয়েছে, মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার হয়েছে এ কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে আনিসুল হক বলেন, হেফাজতে মৃত্যুর কারণে এই উপমহাদেশে প্রথম সাজাও তার সরকারের সময় হয়েছে। তিনি বলেন, অপরাধীদের সাজা দিয়ে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা যায়। কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়, এই দেশে সকলকেই আইন মানতে হবে এবং এর ব্যত্যয় ঘটালে তার বিচার হবে এবং আইনসংগত সাজা হবে। এটা সকলকে মনে রাখতে হবে।

আইনমন্ত্রী বলেন, জনগণ আমাদের ওপরে তখনি আস্থা রাখবে, যখন তারা সঠিক বিচার পাবে। বলেন, বিচারক ও আইনজীবীরা বিচার বিভাগকে কার্যকর করার জন্য অত্যন্ত মূল্যবান দুটি অর্গান। রাষ্ট্রের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ অর্গানের মধ্যে বিচার বিভাগ যেমন একটি, ঠিক তেমনি বিচার বিভাগকে সঠিকভাবে পরিচালনা করার জন্য বিচারক ও আইনজীবীরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দুটি ইনস্টিটিউশন। এই দুই ইনস্টিটিউশন মিলে জনগণের ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।

তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের যে উন্নয়নের ধারা তা চলবে। দুই হাজার ৮৭৬ কোটি টাকা ব্যয়ে যে ই-জুডিসিয়ারি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে সেটাও বাস্তবায়ন হবে। ন্যায়বিচার নিশ্চিত করলে জনগণ এসব কাজের সুফল পাবেন। তিনি বলেন, বর্তমানে ৩৭ লাখ মামলা জট রয়েছে। এ জট কমাতে হবে। আমরা ‘জাস্টিস ডিলেইড ইজ জাস্টিস ডিনাইড আবার জাস্টিস হারিড ইজ জাস্টিস বারিড’ এই দুটির মাঝ দিয়ে চলে এই মামলা জট কমানোর চেষ্টা করবো এবং জনগণের কাছে ন্যায়বিচার পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করবো। জনগণের কাছে ন্যায়বিচার পৌঁছে দেওয়া না গেলে তার পরিণতি কি হবে সেটা মুখে উচ্চারণ করাও উচিত নয়।

মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার পিতার মতোই বিচার বিভাগের স্বাধীনতায় ও উন্নয়নে বিশ্বাসী। বলেন, ব্রিটিশরা যে আদালত ভবনগুলো তৈরি করে গিয়েছিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার আগ পর্যন্ত অন্যান্য সরকার সেগুলোর কোনো পরিবর্তন করেনি। জননেত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর বিচার বিভাগে বৃহদাকারে অবকাঠামো উন্নয়নের কাজে হাত দেন। তার সরকারের উন্নয়নের ছোঁয়া সুপ্রিম কোর্ট থেকে শুরু করে জেলা পর্যায়ে ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট পর্যন্ত পৌঁছে গেছে। সরকার জেলায় জেলায় চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবন ও জেলা জজ আদালত ভবন নির্মাণ করে দিচ্ছে। বিচারকদের সঠিকভাবে মূল্যায়ন করে তাদের বেতন ভাতা বাড়িয়ে দিয়েছেন। কারণ শেখ হাসিনা মনে করেন বিচারকরা আর্থিকভাবে স্বচ্ছল থাকলে তারা কাজে মনোনিবেশ করতে পারবেন এবং জনগণ সুষ্ঠু বিচার পাবেন।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর দেওয়া সংবিধানে বিচার বিভাগ পৃথকীকরণের কথা থাকলেও সামরিক ও খালেদা জিয়ার সরকার তা বাস্তবায়ন করেনি। শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর বিচার বিভাগের অনেক পজেটিভ পরিবর্তন আনেন এবং এই পরিবর্তনের ধারাবাহিকতায় ২০০৭ সালের ১ নভেম্বর বিচার বিভাগ পৃথকীকরণ করা হয়।

ফরিদপুরের জেলা ও দায়রা জজ মো. সেলিম মিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ফরিদপুর ১ ও ৪ আসনের সংসদ সদস্য যথাক্রমে মনজুর হোসেন ও মজিবুর রহমান চৌধুরী (নিক্সন), আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার, জেলা প্রশাসক অতুল সরকার, পুলিশ সুপার মো. আলিমুজ্জামান, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুবল চন্দ্র সাহা, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এওএম খালেদ প্রমুখ বক্তৃতা করেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন আইন ও বিচার বিভাগের যুগ্ম সচিব বিকাশ কুমার সাহা।
আইনমন্ত্রী ( ফাইল ছবি)